আমার বিয়ে কবে হবে জানুন বিস্তারিত
বিবাহ একটি পবিত্রতম সম্পর্ক, আমরা যারা প্রাপ্ত বয়স্ক যুবক আছি অনেকেরই সময়মত
বিয়ে হচ্ছে না। ফলে তারা বিভিন্ন সময়ে গুগলে "আমার বিয়ে কবে হবে" বা "আমার বিয়ে
কার সঙ্গে হবে" এসব লিখে সার্চ দেয়। আমাদের সকলের জীবনের জন্য বিয়ে খুব
গুরুত্বপূর্ন একটি অধ্যায়। মহান আল্লাহ্ তায়ালা নারী-পুরুষ উভয়ের জন্যই বিয়ে
কে ফরজ করেছেন। কিন্তু আপনার বা আমার বিয়ে কবে, কখন, কার সাথে হবে তা মহান
আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিন ছাড়া আর কেউ জানে না।
তবে সংখ্যাতত্ত্ব ব্যবহার করে কিছু অনুমান করা যেতে পারে যা নির্ভর করে আমাদের
জন্ম তারিখের উপর। তবে আপনি যদি মুসলিম ধর্মের হন তবে অবশ্যই এটি পরিহার করবেন ,
কারন এইটি ইসলাম ধর্মের সাথে একদম বেমানান। আপনি মুসলিম হলে আল্লাহ্'র উপর বিশ্বাস রাখুন এবং তার সাথে আর কি কি
করতে পারেন তা নিয়েই আজকের ব্লগে আমরা আলোচনা করতে চলেছি তবে চলুন শুরু করা যাক ।
আমি আশা করি এই ব্লগটি আপনি মনোযোগ সহকারে পড়বেন এবং যদি শেষ পর্যন্ত পড়েন তবে
বিবাহ সম্পর্কিত বিভিন্ন বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন , ইনশাআল্লাহ্ ।
পেজ সূচিপত্রঃ আমার বিয়ে কবে হবে
- আমার বিয়ে কবে হবে
- সংখ্যাতত্ত্বের সাহায্যে অনুমান নেওয়া যেতে পারে
- ছেলেদের ও মেয়েদের তাড়াতাড়ি বিয়ে হওয়ার আমল
- তাড়াতাড়ি বিয়ের জন্য আমল সমূহ
- ৪০ দিনের মধ্যে বিয়ে হওয়ার আমল
- মূলাঙ্ক নির্নয় করে অনুমান করা যায়
- ট্যারো কার্ড পড়ার মাধ্যমে জানা
- নামের অক্ষর দিয়ে সংখ্যাতত্ত্ব বের করা
- কোন বয়সে বিয়ে হবে জানাবে আঙ্গুল
- বিয়ে না হলে কি করনীয় রয়েছে
- কিছু প্রচলিত বিভ্রান্তকর মতামত
- শেষ কথাঃ আমার বিয়ে কবে হবে
আমার বিয়ে কবে হবে
"আমার বিয়ে কবে হবে" এই প্রশ্ন এখন প্রাপ্ত বয়স্ক সকল যুবকের মুখেই সমাদ্রিত আর
থাকবেই না কেন বলুন ? বর্তমানে এতসব হারাম পাপের মাঝে থেকে বাঁচতে এর চেয়ে
উত্তম পন্থা আর দ্বিতীয়টি নেই । কারন বেশিরভাগ যুবক যে পাপে রয়েছে তার বেশি
অংশটি হলো লজ্জাস্থানের পাপ / দুই ঊরুর মাঝের পাপ । আর এই পাপের ভাগিদার এই
যুগের প্রায় প্রতিটি যুবকই কারন বয়সটি এমন ।
সেকারনেই আমাদের সকলের জীবনেই বিয়ে খুব গুরুত্বপূর্ন একটি অধ্যায়। মহান
আল্লাহ্ তায়ালা নারী-পুরুষ উভয়ের জন্যই বিয়ে কে ফরজ করেছেন। কিন্তু আপনার বা
আমার বিয়ে কবে, কখন, কার সাথে হবে তা মহান আল্লাহ্ পাক রাব্বুল আলামিন ছাড়া আর
কেউ জানেন না। তাই আমাদের কাজ হবে ধৈর্য ধারন করা এবং সেই বরকতময় সময় আসার আগে
পর্যন্ত আমল করতে থাকা আর অবশ্যই মহান আল্লাহ্ পাক রাব্বুল আলামিন এর
উপর আস্থা রাখা ।
সংখ্যাতত্ত্বের সাহায্যে অনুমান নেওয়া যেতে পারে
"সংখ্যাতত্ত্ব" এর ইংরেজি প্রতিশব্দ ''Numerology'' । অনেকেই এই
শব্দটির সাথে পরিচিত নন তবে যারা প্রাচীন শাস্ত্র সম্পর্কে ধারনা রাখেন তারা
এটি শুনে থাকবেন । এটি এমন এক প্রাচীন বিদ্যা যার দ্বারা, আমরা মানুষের
জন্মতারিখ ও নামের সংখ্যাগুলো কে বিশেষভাবে গবেষনা/বিশ্লেষণ করে তাদের
কাজকর্ম ও জীবনের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার সময় কে অনুমান করা যায়। উক্ত
সংখ্যাগুলোকে যোগ করে তাদের যোগফল ও সম্পর্ক থেকে অনেকেরই বিবাহের সম্ভাব্য
সময় অনুমান করতে পারি আমরা । শুরুতেই আমরা আমাদের পারসোনাল ইয়ার বের
করবো ।
আরো পড়ুনঃ আমার কত বছর বয়সে বিয়ে হবে
নিম্নের ধাপগুলো অনুসরণ করে আমরা কাজটি করতে পারিঃ
- শুরুতেই আমাদের যা প্রয়োজন তা হলো আমাদের জন্মতারিখ , জন্ম মাস ।
- মনে রাখতে হবে আমরা জন্মসাল টি নিবো না ।
- এরপর আমাদের জন্মতারিখের সব সংখ্যাগুলো যোগ করতে হবে ।
- যতক্ষণ না এক অঙ্কের সংখ্যা আসে, ততক্ষণ যোগ করে যেতে হবে ।
- যে বছরে আপনি বিবাহ করার কথা নিয়ত করছেন সেটিকে নিতে হবে
উদাহরণ:
ধরে নিই জাদুর ,জন্ম তারিখ – ১০ / ১০/ ১৯৯৮
সে বিয়ে করতে চায় ২০২৫ সালে ।
১+০+১+০+২+০+২+৫ = ১১
১ + ১ = ২
অর্থাৎ, জাদুর পারসোনাল ইয়ার নম্বর = ২
একটি অনুরোধ আপনি যদি ইসলাম ধর্মের অনুসারি হয়ে থাকেন তবে এই কাজটি করা থেকে
বিরত থাকুন কারন এইটি সনাতন ধর্মের প্রথা ।
ছেলেদের ও মেয়েদের তাড়াতাড়ি বিয়ে হওয়ার আমল
ইসলাম ধর্মের দৃষ্টিতে বিয়েকে আমাদের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে
বিবেচনা করা হয়। এটি শুধুমাত্র দুটি মানুষের মধ্যে সম্পর্ক নয়, বরং এটি একটি
সামাজিক, নৈতিক, এবং ধর্মীয় দায়িত্ব পালন হয়ে থাকে। অনেক সময় আমাদের সমাজের
ছেলেদের বিয়ের ক্ষেত্রে দেরি হয়, যা তাদের মানসিক,সামাজিক, এবং অর্থনৈতিক জীবনে
প্রভাব ফেলতে পারে।
ছেলেদের তাড়াতাড়ি বিয়ে হওয়ার আমল ও মেয়েদের তাড়াতাড়ি বিয়ে হওয়ার আমল উভয়েরই
বিয়ে করার আমল একই। আলাদা করে কোন আমল নেই কারন, বিয়েটা ছেলে এবং মেয়ের দ্বারা
সফল হয়। ছেলেদের তাড়াতাড়ি বিয়ে হওয়ার আমল ও মেয়েদের তাড়াতাড়ি বিয়ে হওয়ার আমল
যেহেতু একই তাই উভয়েরই দ্রুত বিয়ে হওয়ার জন্য যে আমল গুলো আছে তাদের মধ্যে থেকে
যেকোন একটি আমল করতে পারেন।
ছেলে-মেয়েদের অতি দ্রুত বিয়ের আমলগুলো নিম্নে সুন্দর ভাবে বিস্তারিত আলোচনা
করার চেষ্টা করেছি আশা করি খুব মনোযোগ সহকারে ধৈর্য নিয়ে পড়বেন । এবং উক্ত
আমলগুলো প্রতিদিন চলমান ভাবে করতে থাকলে সঠিক ফল পাবেন বলে আমি আশা করি । তবে
চলুন নিচের পয়েন্ট গুলোতে যাওয়া যাক।
তাড়াতাড়ি বিয়ের জন্য আমল সমূহ
আমরা শুরুতেই জেনেছি এবং পড়েছি জন্ম, মৃত্যু, বিয়ে সবই মহান আল্লাহ্ তায়ালার
হাতে, মহান আল্লাহ্ তায়ালা যখন চাইবে তখন তার বিয়ে হবে। বাংলায় একটি প্রবাদ
আছে- বিয়ের ফুল ফুটলে বিয়ে হবে। আমাদের সমাজে অনেক ছেলে মেয়ে আছে যাদের
বিয়ের বয়স হওয়ার সাথে সাথেই খুব দ্রুত বিয়ে হয়ে যায়। অপরদিকে অনেকে আছে যাদের
বিয়ের বয়স পার হয়ে যাচ্ছে কিন্তু তবুও বিয়ে হচ্ছে না। যাদের বিয়ে বয়স পার হয়ে
যাওয়ার পরও বিয়ে হচ্ছে না তাদের জন্য রয়েছে কিছু ধর্মীয় আমল যা করতে থাকলে
বিয়ে হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে । এই ৭টি আমল এর মধ্যে যেকোন একটি আমল করলেই
ইনশাল্লাহ আপনাদের যাদের বিয়ে হতে দেরি হচ্ছে তাদের বিয়ে খুব দ্রুত হয়ে যাবে,
ইনশাআল্লাহ্। আমল গুলো নিম্নে দেওয়া হলোঃ
বেশি বেশি ইস্তেগফার পড়া-যে ব্যাক্তি সব সময় বেশি বেশি জাবানে ইস্তেগফার জারি
রাখে সে মুসতাজেবুদ হয়ে যায়। যার দোয়া মহান আল্লাহ্ পাক কখনও ফেরত দেন না।
" আসতাগফিরুল্লাহ, আসতাগফিরুল্লাহ "
" আসতাগফিরুল্লাহাল্লাজি লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়্যুল কাইয়্যুমু ওয়া আতুবু
ইলাইহি "
সূরা "আদ-দোহা" ও "সূরা কাসাসের" ২৪ নং আয়াত পাঠ করা -
যদি কোন ছেলে সূরা কাসাসের ২৪ নং আয়াতটি ১০০ বার পড়ে তাহলে মহান আল্লাহ্
তায়ালা খুব তাড়াতাড়ি তাকে বিবাহের ব্যাবস্থা করে দিবেন। আয়াতটি হলঃ
"ফাসাক্বা লাহুমা ছুম্মা তাওয়াল্লা ইলাজজিল্লি ফাক্বালা রাব্বি ইন্নি লিমা
আংযালতা ইলাইয়্যা মিন খায়রিং ফাক্বির"
হযরত মূসা (আঃ) যখন একাকি অনুভব করত তখন এই দূয়াটি বেশি বেশি করে পাঠ করতেন।
আর যদি প্রাপ্ত বয়সের মেয়েরা সূরা আদ-দোহা নিয়মিত ১১ বার তেলাওয়াত করে তাহলে
মহান আল্লাহ্ তায়ালা তাকে উত্তম পাত্রের ব্যাবস্থা করে দিবেন।
আরো পড়ুনঃ জন্ম তারিখ অনুযায়ী বিবাহ কবে হবে
সূরা "ইয়াসিন" পাঠ করা উচিত-
আমাদের মধ্যে যাদের বিয়ের প্রস্তাব আসে কিন্তু বিয়ে হয় না তাদের জন্য সূরা
ইয়াসিন পাঠ করা একটি কার্যকরী আমল হতে পারে। সূরা ইয়াসিনে মুবিন আছে ৭টি। রোজ
সকালে সূর্য যখন পূর্ব আকাশে লাল হয়ে উঠবে তখন পশ্চিম দিকে মুখ করে সূরা
ইয়াসিন পাঠ করতে হবে। আর "মুবিন" শব্দ তেলাওয়াত করা হবে তখন শাহাদাতের আঙ্গুল
দিয়ে সূর্যের দিকে ঈশারা করতে হবে।
সূরা "তাওবার" ১২৯ নং আয়াতটি পাঠ করা-
যাদের বিয়ে হচ্ছে না, তারা প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায়ের পর (ছেলে-মেয়ে
উভয়ই) সূরা তাওবার ১২৯ নং আয়াতটি পাঠ করবে। ১৯ বার বিসমিল্লাহ, ১১০০ বার সূরা
তাওবার ১২৯ নং আয়াত, ১০০ বার দূরুদ শরীফ, ও শেষে আবার ১৯ বার বিসমিল্লাহ পাঠ
করবে। আয়াতটি হল-
"ফাইং তাওয়াল্লাও ফাকুল হাসবিয়াল্লাহু লা ইলাহা ইল্লাহুয়া আলাইহি
তাওয়াক্কালতু ওয়া হুয়া রাব্বুল আরশিল আজিম"
"সূরা মুজাম্মিল" পাঠ করা-
যদি কোন ছেলে বা মেয়ের বিয়ের বয়স হয়ে যাওয়ার পরও বিয়ের প্রস্তাব না আসে তাহলে
সেই ছেলে বা মেয়ের বাবা অথবা মা শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর ২ রাকাত নফল
নামাজ পড়ে ২১ বার সূরা মুজাম্মিল পাঠ করতে হবে।
তাসবিহে ফাতেমি পাঠ করা-
প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায়ের পর নিয়মিত তাসবিহে ফাতেমি পাঠ করা।
তাসবিহে ফাতেমি হল-
- আলহামদুলিল্লাহ ৩৩ বার পাঠ করা ।
- আলহামদুলিল্লাহ ৩৩ পাঠ করা ।
- আলহামদুলিল্লাহ ৩৩/৩৪ পাঠ করা ।
তাসবিহে ফাতেমি পাঠ করার আগে কোরআন মাজিদ তেলাওয়াত ও দূরূদ শরীফ পাঠ করে
নেওয়া উচিত।
"সূরা মরিয়ম" পাঠ করা-
যদি কোন ছেলে বা মেয়ের বিয়ে না হয় তাহলে যেকোন এক ওয়াক্তের সালাত আদায়ের পর
সূরা মরিয়ম পাঠ করতে হবে। এই আমলটি ছেলে-মেয়ে বা তাদের বাবা-মা ও করতে পারে।
৪০ দিনের মধ্যে বিয়ে হওয়ার আমল
ইসলামে বিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ ফরজ ইবাদাত, যা আমাদের জীবনের পূর্ণতা আনে এবং
আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে সহায়ক হয়। অনেকেই দ্রুত বিয়ে হওয়ার জন্য আল্লাহর রহমত
ও সাহায্য কামনা করেন।নির্দিষ্টভাবে ৪০ দিনের মধ্যেই বিয়ে হওয়ার জন্য নির্দিষ্ট
কোনো আমল বা বিধি ইসলামে সরাসরি নির্ধারিত করা নেই। তবে, আমরা কিছু দোয়া, ইবাদত
এবং আমল করতে পারি যেগুলো করলে আল্লাহর কাছে দ্রুত সাহায্যের আশা করা যেতে
পারে।
যেসকল ছেলে-মেয়ে দের বিয়ের বয়স পার হয়ে যাচ্ছে কিন্তু তবুও বিয়ে হচ্ছে না। ছেলে
পক্ষ বা মেয়ে পক্ষ এসে ফিরে যাচ্ছে। তারা প্রত্যেকেই ফজরের নামাজের পর
সূর্যোদয়ের আগে ৪০ বার করে ৪০ দিন পর্যন্ত ছেলেরা ডান হাত দিয়ে বাম হাতের কব্জি
চেপে ধরে ও মেয়েরা বাম হাত দিয়ে ডান হাতের কব্জি চেপে ধরে "ইয়া ফাত্তাহু" বেশি
বেশি পাঠ করবে।
এইছাড়া আমাদের তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করা উচিত । তাহাজ্জুদের নামাজ আল্লাহর
নৈকট্য অর্জনের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিশেষ মাধ্যম। গভীর রাতে এই সালাত আদায় করলে
দোয়া কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
মূলাঙ্ক নির্নয় করে অনুমান করা যায়
"মূলাঙ্ক" এই শব্দটি হয়তো প্রথমবারের মতো শুনলেন এবং প্যারা খেয়ে গেছেন আলরেডি
। আরে এতো প্যারা কিসের আপনাদের অ্যাডমিন আছেন কি করতে? তবে চলুন পড়ে ফেলা যাক
এই "মূলাঙ্ক" টি আসলে কি। সংখ্যাতত্ত্বের বিষয়টি আমরা শুরুতেই পড়েছি তাই আর
গভিরে যাচ্ছি না তানাহলে লিখাটি অনেক বড় হয়ে যাবে যদিও বেশি বড় লিখলে আপনারা
বেশি পড়বেন আর অবশ্য এতে লাভ আমারই , তবে যাইহোক যেহেতু সময় নিয়ে পড়ছেন তাই
আপনাদের মূল্যবান সময়টি আর নষ্ট করছি না । তো যা আলোচনা করছিলাম সেইখানে ফিরে
যাওয়া যাক ।
এই সংখ্যাতত্ত্বের মান অনুযায়ী, আপনাদের জন্মতারিখের একক যোগফলটিকে আমরা
"মূলাঙ্ক" বলতে পারি। এই মূলাঙ্ক আপনার ব্যক্তিত্ব, প্রেম ও বৈবাহিক জীবনের উপর
গভীর প্রভাব ফেলে। আপনাদের জন্মতারিখ (মাস হিসেবে) ১ থেকে ৩১-এর মধ্যে যেকোনো
কোন সংখ্যা হতে পারে। এই সংখ্যাগুলোর যোগফলকে যদি এক অঙ্কে পরিণত করি তবেই
আপনাদের মূলাঙ্ক মান পাওয়া যাবে । পড়েই হয়তো বুঝতে পারছেন এই পদ্ধতিটা কিছুটা
"সংখ্যাতত্ত্ব" এর মতোই । যেমন, আপনার জন্মতারিখ যদি ২৮ হয়, তবে ২ + ৮ = ১০,
১ + ০ = ১, অর্থাৎ আপনার মূলাঙ্ক হবে ১।
এই মূলাঙ্ক অনুযায়ী,
যাদের জন্মতারিখ ১, ১০, ১৯ বা ২৮ তারিখে তারা সাধারণত মুলাঙ্ক ১ এর অধিকারি।
এদের অধিপতি প্রতিক হচ্ছে "সূর্য"। এই ১ মুলাঙ্কের জাতকরা স্বভাবত লাজুক
প্রকৃতির হয়ে থাকে। এরা হুট করে এদের প্রেমের কথা, ভালোবাসার কথা প্রকাশ করতে
পারেনা। তাই এদের প্রেম করে বিয়ে করার চান্সটা কম তাই অনুমান করা যায়। কিন্তু
এদের মধ্যে নেতৃত্বের গুণ বিদ্যমান থাকার ফলে এরা যা বলে সেটিকেই শেষ কথা বা
শ্রেষ্ঠ বলে ধরে নেয় এরা । এরা যদি একবার নিজের পছন্দের জীবন সঙ্গী কে পেয়ে
যায় তাহলে তাদের হাত সহজে ছাড়ে না।
এরা যদি প্রেম করে তবে সেই মেয়েটিকেই তার জীবনসঙ্গিনী হিসেবে আঁকড়ে রাখতে তারা
সে সম্পর্কটিকে বিয়ে পর্যন্ত নিয়ে যায়। তবে লাজুক প্রকৃতির হোয়ার ফলে এদের
জীবনে সেই প্রেমটি কখনো আসেনা ।আরেকটি কথা এরা কম কথা বলা পছন্দ করে ।
আবার, যাদের জন্মতারিখ ২, ১১, ২০ বা ২৯ তারিখে তারা সাধারনত মুলাঙ্ক ২ এর
অধিকারি। এই মুলাঙ্কের জাতক বা জাতিকারা "চন্দ্র"র অধিপতি হয়ে থাকে । এরা আবার
একটু মুডি মাইন্ডের হয়ে থাকে। এই জাতকদের কাছে শারীরিক সম্পর্কের চেয়ে
আবেগতাড়িত সম্পর্ক বেশি গ্রহণীয়।আরেকটি কথা এরা অবশ্য একটু চিন্তাশীল হওয়ায় সব
কিছুতেই ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন ।
আরো পড়ুনঃ আমার বিয়ে কোথাই হবে
শুরুতেই বলেছি আমরা যে, এই মূলাঙ্কের জাতকদের শারীরিক সম্পর্কের প্রতি খুব বেশি
একটা ইচ্ছা থাকেনা । কারন এরা চায় শারীরিক সম্পর্কের চেয়ে আবেগপ্রবন সম্পর্কে
বেশি যুক হতে । তাই এ মুলাঙ্কের জাতকরা "চন্দ্র"র দ্বারা প্রভাবিত হয় যার ফলে
এদের মাইন্ড সংবেদনশীল হয়ে থাকে এবং এরা তাদের সঙ্গিনীকে সবকিছু মনে করেন এবং
তাদের সঙ্গিনীর সাথে আত্মার সম্পর্কে যুক্ত হতে চায় এরা। এদের প্রেম করে বিয়ে
করা সম্ভাবনা খুব বেশি বলে অনুমান করা যায়।
এইভাবেই মূলত মূলাঙ্ক মানের সাহায্যে আমরা জন্ম তারিখ অনুযায়ী বিবাহ কবে হবে
তা অনুমান করতে পারি।
ট্যারো কার্ড পড়ার মাধ্যমে জানা
অনেকেই হয়তো বুঝতে পারছেন না এই ট্যারো কার্ডটি আসলে কি । আসুন খুব সহজেই
সংক্ষেপে জেনে নেওয়া যাক ট্যারো কার্ড জিনিসটি আসলে কি ।ট্যারো কার্ড হলো,
মূলত এক ধরনের আধ্যাত্মিক পদ্ধতি, যেখানে কয়েকটি বিশেষ কার্ডের প্রতীক ও
চিহ্ন দেওয়া থাকে যা থেকে বিশ্লেষণ করে ভবিষ্যতের ইঙ্গিত পাওয়া যায় বলে
পশ্চিমা দেশের মানুষরা এটি বিশ্বাস করে থাকে এবং সে দেশগুলো তে এইসবের বহু
প্রচলন রয়েছে। এটি মূলত খ্রিষ্টিয় ধর্মের মানুষদের বিশ্বাসের ওপর নির্ভর করে
থাকে। আসলে খ্রিষ্টান ধর্মের মানুষরাই এটি বেশি ব্যবহার করে থাকে ।
এই ট্যারো কার্ড ব্যবহার করার নিয়ম হলো , অনেক গুলো ট্যারো কার্ড সাফ্লিং করা
হবে এবং এর মাঝে থেকে যেকোনো একটি কার্ড একজন পছন্দ করবে আর সে কার্ডটি তুলবে
অতঃপর কার্ডে যে লেখাগুলো থাকবে সেটিকেই তার সামনের দিনগুলি কেমন হবে তা
অনুমান করে । আর এইভাবেই ট্যারো রিডিং করে মানুষ তার আগামী দেখতে চায় অবশ্য
পশ্চিমারা এটিকে বিয়ের ক্ষেত্রেও ব্যবহার করে থাকে ।
আরো পড়ুনঃ আরবি মাসের ক্যালেন্ডার ২০২৬
আমি শুরু থেকেই বলছি পশ্চিমারা করে থাকে এইটি । তবে অবশ্যই আপনি যদি ইসলাম
ধর্মের অনুসারী হয়ে থাকেন তবে কখনোই এই পন্থা অবলম্বন না করার অনুরোধ করছি
কারন এইটি পুরোটা "শির্ক" । আর এইটি সর্বোচ্চ মহাপাপ যা "আল্লাহ্" কখনোই
ক্ষমা করবেন না । সুতরাং এইটি কাজটি করা থেকে বিরত থাকবেন ।
নামের অক্ষর দিয়ে সংখ্যাতত্ত্ব বের করা
একজন ব্যক্তি নাম তাঁর জীবনের নানান গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের সাথে জড়িয়ে থাকে।
স্বভাব, ব্যক্তিত্ব, চরিত্র এ সব কিছু জানা যায় তার আচার আচরনের মাধ্যমে।
আবার এর দ্বারাই কোন ব্যক্তির বিয়ের দিনক্ষণ অনুমান করা হয়ে থাকে। নামের
অক্ষর দিয়ে কোনও ব্যক্তির নাম তাঁর বৈবাহিক জীবন সম্পর্কে সংখ্যাতত্ত্ব তথ্য
প্রদান করতে পারে বলে মনে করা হয়। সংখ্যা জ্যোতিষশাস্ত্র অনুযায়ী নামের শুরুর
অক্ষর বিচার করে সহজেই ব্যক্তির জীবনসঙ্গীর নামের প্রথম অক্ষর, কবে বিবাহে
হবে,তাঁদের জীবন কেমন কাটবে সে সব জানা যেতে পারা যেতে পারে বলে অনুমান করতে
পারি।
নামের অক্ষর দিয়ে সংখ্যাতত্ত্ব অনুযায়ী কারও নাম যদি "A, T, P, K, L"এইসব
অক্ষরের মধ্যে কোনও একটি দিয়ে শুরু হয়, তা হলে তাঁদের বিয়ে P ও K আদ্যক্ষরের
ব্যক্তির সঙ্গে হতে পারে এইটি ধারনা করে সংখ্যাতত্ত্ব এর হিসাব। এই পাঁচটির
মধ্যে কোনও একটি অক্ষর দিয়ে নাম শুরু হয় যে ব্যক্তির, তাঁদের বিয়ের কোনও
নির্দিষ্ট বয়স বা সময় থাকে না। এই অক্ষরের কোনও কোনও জাতক জলদি বিবাহ করে
নেন, আবার কেউ কেউ নিজের ক্যারিয়ারে মনোনিবেশ করেন। ক্যারিয়ারে সাফল্য লাভের
পর এরা বিবাহের প্রস্তুত নেন। পরিবারকে খুশি রাখতে সর্বোক্ষণ সচেষ্ট থাকেন
এইধরনের মানুষরা।
এইভাবেই "A, T, P, K, L, B, M, J, V, Y" ছাড়াও অন্যান্য নামের অক্ষর দিয়ে
সংখ্যাতত্ত্বের সাহায্য বিবাহ কবে হবে তা অনুমান করা হয়ে থাকে।
কোন বয়সে বিয়ে হবে জানাবে আঙ্গুল
এই টপিক কে আর দীর্ঘ করছি না কারন এই মতামতের কিছু সমালোচনা রয়েছে, তবুও আমার
সনাতন ধর্মালম্বী পাঠকদের জন্য একটু লিখছি বৃদ্ধাঙ্গুলের ৯টি তির্যক রেখা
নবগ্রহের দিকে ইশারা করে। বৃদ্ধাঙ্গুলের প্রথম রেখা জীবনের নানান রহস্যকে
উন্মোচন করে থাকে। প্রথম রেখা ১০ বছর, দ্বিতীয় ২০ ও তৃতীয় রেখা ৩০ বছর, এভাবে
৯টি রেখা পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে ব্যক্তির বয়স ভাগ করা থাকে।
আরো পড়ুনঃ আমার বিয়ে কার সাথে হবে তার ছবি দেখাও
জীবনসঙ্গীর নাম দ্বিতীয় ও তৃতীয় রেখার মাঝখানে থাকলে জাতকের বিয়ে ২০ থেকে ৩০
বছরের মধ্যে হতে পারে। আবার তৃতীয় ও চতুর্থ রেখার মধ্যে জীবনসঙ্গীর নামের চিহ্ন
পেলে ৩০ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে বিয়ে হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
বিয়ে না হলে কি করনীয় রয়েছে
শুরুতেই অনেকবার বলেছি এবং আপনারা পড়েছেন যে, বিয়ে আমাদের জীবনের একটি
গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হলেও কিন্তু এটি আমাদের জীবনের একমাত্র লক্ষ্য বা চূড়ান্ত
অর্জন নয়। অনেক সময় সঠিক সঙ্গী খুঁজে পাওয়া বা জীবনের প্রস্তুতি সম্পূর্ণ না
হওয়ার কারণে বিয়ে দেরি হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে হতাশা কাজ করাটা খুবই
স্বাভাবিক তবে এতটা হতাশ হওয়ারও কোনো কারণ নেই কারন, আপনাকে সৃষ্টির ৫০ হাজার
পূর্বে আপনার তাকদিরে বিয়ে লিখা থাকে তবে অবশ্যই সেটি সময় মতো হয়ে যাবে
ধৈর্যহারা হবেন না ।
আমরা যারা ছেলে-মেয়ে আছি যাদের বিয়ের বয়স পার হয়ে যাওয়ার পরও বিয়ে হচ্ছে না।
অথবা যদি আপনার বিবাহ যোগ্য প্রাপ্তবয়স্ক মেয়ে থাকে কিন্তু তাদের কোন একটা
কারণে বিয়ে হচ্ছে না। বরং বার বার বিয়ে ভেঙ্গে যাচ্ছে।
তাহলে সেই মেয়ের বাবা-মা এর উচিত হবে নিম্নক্তো আমল গুলো নিয়মিত করতে থাকাঃ
যদি কোন মেয়ের বিয়ে না হয় তাহলে সেই মেয়ের পিতা এবং মাতা যেকোন একজনকে মেয়ের
বিয়ের নিয়ত করে ২ রাকাত নফল সালাত আদায় করতে হবে এবং নামাজ শেষে "ইয়া লাতীফু"
যার অর্থঃ "হে সুক্ষ্মদর্শক"। ১০০ বার করে পাঠ করতে হবে। আবার ছেলে ও মেয়ে উভয়ই
"ইয়া লাতীফু" দিনে ৫০০ বার করে পাঠ করবে।
এই আমল চলমান থাকবে যতদিন পর্যন্ত না বিয়ে হচ্ছে , তবে বিয়ে হতে বেশি দেরী হলে
হতাশ হওয়ার কিছুই নেই বরং আপনি আরো কিছুদিন সময় পাচ্ছেন নিজেকে ভালো ভাবে বিয়ের
জন্য প্রস্তুত হওয়ার জন্য চলেন জেনে নেই এইসময়ে আপনি কেমন কি দক্ষতা অর্জন করতে
পারেনঃ
- শিক্ষা ও দক্ষতা বৃদ্ধি করুন ।
- সময় কে কাজে লাগিয়ে নতুন কোনো দক্ষতা শিখুন, যেমনঃ রান্না, সংগীত, ফটোগ্রাফি বা অন্য যেকোনো শখ।
- পেশাগত দক্ষতা বাড়াতে উন্নত প্রশিক্ষণ নিতে পারেন ।
- ভিন্ন ভিন্ন বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করুন, যা আপনার জ্ঞান বাড়াতে সাহায্য করবে ।
- এখন যেহেতু ছেলেদের টাকা দেখে তাদের পছন্দ করা হয় তাই উপার্জন ভালো করার চেষ্টা করুন।
কিছু প্রচলিত বিভ্রান্তকর মতামত
আচ্ছা এত যে আমার বিয়ে কবে হবে নিয়ে জ্ঞান দিলাম ইতোমধ্যেই আপনাদের মনে হয়তো অনেক প্রশ্ন
এসেছে কিন্তু মুখ ফুটে বলতে পারছেন না লোক লজ্জায় ওকে সমস্যা নেই ভাই আমিও বুঝি
এই পরিস্থিতি সত্য বলতে লোক কথা থেকে বাঁচতেই আমার ব্লগিং শুরু করা । এহে অন
টপিক পয়েণ্ট থেকে সরে এসেছি সেকারনে দুঃখিত! তবে চলুন আবার ফিরে যাওয়া যাক
আমাদের আজকের টপিকে , আচ্ছা আমরা শুরুতেই পড়েছি বিয়েটা একটি পবিত্রতম বন্ধন
এইটা তো মানেন নাকি? ঠিক আছে বুঝলাম মানেন । তবে এই পবিত্রতম সম্পর্ককে নিয়েও
কিছু প্রচলিত কুসংস্কার যা আমাদের (বিশেষত গ্রামীণ) সমাজে এখনো বিরাজমান । কি
বিশ্বাস হচ্ছে না তবে চলুন পড়ে নিই তেমনই কিছু প্রচলিত কুসংস্কার যা এখনো চলে
আসছে....
নিম্নে এর কিছু মতামতের উওদাহরণ দেওয়া হলোঃ
- ভাদ্র মাসে বিবাহ করতে নেই কারন এই মাস অশুভ
- যে তারিখে জন্মিয়েছে সে তারিখে বিবাহ করা অনুচিত
- বিয়ে হতে দেরি হচ্ছে মানে তার মন্দ ভাগ্য
- পা ছুঁয়ে সালাম করার প্রথা
- যৌতুক কে হালাল মনে করা
আমার বিয়ে কার সাথে হবে তার ফেসবুক আইডি এইসব লিখে সার্চ করবেন না আবার এইটা
আরেক ব্যাধি ।
আরো পড়ুনঃ কিভাবে ফ্রি টাকা ইনকাম করা যায়
বেশি লিখলাম না তা নাহলে তখন এত কারন দেখে বিয়েই করতে চাইবেন না, তবে এইরকম
আরো অনেক বিভ্রান্তকর কথা শুনতে পাওয়া যায় আমাদের গ্রামগঞ্জের দিকে । আপাতত
এইসব মতামত কে আমরা এড়িয়ে চলার চেষ্টা করবো সেটি হবে আমাদের জন্য মঙ্গল কারণ
লোকে বানানো কথা গুলো অযথা বিশ্বাস মাত্র যার আসলেই কোন বাস্তব ভিত্তি এই
পর্যন্ত নেই ।
শেষ কথাঃ আমার বিয়ে কবে হবে
পাঠকগণ "আমার বিয়ে কবে হবে" নীশের আজকের ব্লগের শেষ কথাতে চলে আসলাম আজকের এত বড় ব্লগের এই জায়গাটা পড়ছেন মানেই শেষ পর্যন্ত পড়ছেন সেটির জন্য আমি অবশ্যই আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞ এবং আপনাদের এই পড়ার প্রতি যে ভালোবাসা সেটি অমর থাকুক। তো আজকের ব্লগের সমাপ্তিটা এইখানেই ঘটছে ।
আর পরবর্তি বল্গটি কোন বিষয়ে চান সেইটি কমেন্ট করে জানাবেন আশা রাখছি । সকলেই ভালো থাকবেন, আমার জন্য দোয়া রাখবেন,
আস সালামু আলাইকুম ।


The ClickEra এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। কারণ,আপনাদের প্রতিটি কমেন্টে আমরা নতুন কিছু করার অনুপ্রেরণা পাই।
comment url